ম্যালেরিয়ার পরজীবীর সংক্রমন

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র | | NCTB BOOK
11

ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ (Transmission of Malaria): Plasmodium-এর পোষক হিসেবে প্রায় দু'শ প্রজাতির Anopheles রয়েছে। স্ত্রী Anopheles-ই ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ানোর একমাত্র মাধ্যম। রোগ বিস্তারের মাধ্যমে মহামারী সৃষ্টি করার জন্য ছয় প্রজাতির Anopheles মশকীকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। এরা হলো Anopheles culicifacies. A stephensi, A. fluviatilis, A. minimus, A.
dirus এবং A sundaicus মশকী প্রজাতিগুলো যখন ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে দংশন করে তখন রক্তের মাধ্যমে পরজীবীর বিভিন্ন ধাপ ওদের গ্রুপে প্রবেশ করে। এভাবে আক্রান্ত মশকী কোনো সুস্থ মানুষকে দংশন করলে পরজীবীগুলো মশকীর লালারসের মাধ্যমে মানবদেহে বা অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণিদেহে প্রবেশ করে ।মানুষ হচ্ছে চার প্রজাতির ম্যালেরিয়ার পরজীবীর একমাত্র প্রাকৃতিক পোষক। ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত মানুষই হলৌ ম্যালেরিয়া সংক্রমণের উৎস। তাই বলে সকল ম্যালেরিয়া রোগীই কিন্তু সংক্রমণের ভান্ডার নয়। যে রোগীর রক্তে পর্যাপ্ত সংখ্যক পরিণত, জীবন্ত ও উৎকৃষ্ট মানের গ্যামেটাসাইট থাকে সে ব্যক্তিই সংক্রমণের প্রকৃত উৎস । প্রান্তীয় রক্ত সংবহনে গ্যামেটোসাইট যদি খুব কম থাকে বা অপরিণত থাকে কিংবা স্ত্রী পুরুষ গ্যামেটোসাইটের অনুপাতে ব্যাপক বৈষম্য থাকে তাহলে রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনাও কমে যায়। মশকী যখন দংশন করে তখন Pvivax এর অন্ততঃ ৬টি এবং P falciprarum এর ১২টি গ্যামেটোসাইট মশকীর দেহে প্রবেশ করতে হয়। যাদের রক্তে পর্যাপ্ত সংখ্যক গ্যামেগোসাইট থাকে তাদের সক্রিয় (active) এবং যাদের রক্তে গ্যামেটোসাইটগুলো কোনো এক সময় কার্যকর হচ্ছে এমন অবস্থায় থাকে, তাদের বাহক বলে ।  চিকিৎসারত কিংবা স্বল্প চিকিৎসাপ্রাপ্ত রোগীরা সংক্রমণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করে। P falciparum-এর গ্যামেটোসাইট রক্তে ৩০-৬০ দিন বা তারও বেশি, ১২০ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকতে পারে। P. vivax এর গ্যামেটোসাইট লোহিত রক্তকণিকার ভেতর ৭ দিনের বেশি বাঁচে না। কাজেই ঐ সময়ের মধ্যে মশকী রক্ত খেলে ম্যালেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। এভাবে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে এবং ম্যালেরিয়া জন-জনান্তরে ছড়িয়ে পড়ে।

কেবল Anopheles মশকীই জীবাণু বহন করে কেন ? ম্যালেরিয়া রোগের বাহক হিসেবে একমাত্র Anopheles গণের বিভিন্ন প্রজাতির মশকীই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। কারণ অন্য প্রজাতির মশকীদেহে এমন বিষাক্ত উপাদান থাকে যা Plagsmodium-এর জন্য ধ্বংসাত্মক। ঐসব মশকী প্রজাতির মধ্যান্ত্রের প্রচন্ড ট্রিপসিন-সদৃশ কর্মকান্ড ঘটতে দেখা যায় যা Plaasmodium-এর উওকিনেটের পরিস্ফুটনকে রূদ্ধ করে দেয়। দংশনের সময়কাল, পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা ও মশকী-দেহে স্পোরোগোনি ঘটানোর সমস্ত উপাদান Plaasmodium-এর অনুকূলে থাকায় কেবল Anopheles- মশকীর দেহেই জীবাণুর পরিস্ফুটন ও বহন সম্পন্ন হয়।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Promotion